বন্ধুরা আজকের এই প্রতিবেদনে আলোচনা করবো সম্প্রতি রাজ্য সরকার দ্বারা চালু হওয়া একটি বিশেষ প্রকল্প নিয়ে। এখন শুধুমাত্র লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ভাতাই নয়, এবার রাজ্যের মহিলাদের চাকরির নিশ্চয়তা দেবে রাজ্য। সেই লক্ষ্যেই গঠন করা হল ‘উইমেন্স এমপ্লয়মেন্ট প্ল্যাটফর্ম’। এর মাধ্যমেই লক্ষাধিক মহিলার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির পথে এগোচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
বিগত ১৩ বছরে নারীর ক্ষমতায়নে একাধিক প্রকল্প চালু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, কন্যাশ্রী প্রকল্প নারী শিক্ষায় রাজ্যকে অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছে। উচ্চশিক্ষা সম্পূর্ণ করছেন, এমন পড়ুয়াদের সংখ্যা বেড়েছে বহুগুণ। ফলে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চাকরি পাওয়ার তাগিদও। এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট আসতেই নড়েচড়ে বসে নবান্ন। মহিলাদের চাকরির সুযোগ বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মন্ত্রিসভার ছাড়পত্র মিলতেই কাজ শুরু করেছেন এই ‘প্ল্যাটফর্মে’র সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকরা। প্রথমে, প্রতিটি দপ্তরের হাতে থাকা মহিলাদের চাকরি এবং কাজ সম্পর্কিত তথ্য মিলিয়ে দেখে কোন কোন ক্ষেত্রে কতজন কাজ করছেন, তার একটি রিপোর্ট তৈরি করা হবে । পাশাপাশি, কোন কোন ক্ষেত্রে এঁদের জন্য আরও চাকরির সুযোগ তৈরি করা যায়, তাও খতিয়ে দেখা হবে।
একই সঙ্গে জানা হবে, কোন কোন ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলি বেশি করে মহিলাদের কাজ দিতে পারবে। শহর, গ্রামীণ এলাকা, সরকারি অফিস এবং বেসরকারি সংস্থা, সমস্ত ক্ষেত্রেই নারীদের চাকরির সুযোগ বাড়াতে আরও কী কী করা প্রয়োজন, তাও চিহ্নিত করা হবে। এই সামগ্রিক বিষয়গুলিকে একত্রিত করে একটি শ্বেতপত্র তৈরি করবে রাজ্য সরকার। এই শ্বেতপত্রের উপর নির্ভর করেই পরবর্তী কর্মসূচি সাজিয়ে তোলা হবে বলে রাজ্যের এক আধিকারিক জানিয়েছেন।
আরেকটি প্রকল্প : সুখবর! কেন্দ্রীয় সরকার মহিলাদের জন্য নিয়ে এলো দারুন একটি প্রকল্প। দেখে নিন কিভাবে আবেদন জানাবেন।
নবান্ন সুত্রে জানা গিয়েছে , অর্থ, শ্রম, কারিগরি শিক্ষা, শিল্প, ক্ষুদ্রশিল্প, স্বাস্থ্য, অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ, পঞ্চায়েত, তথ্য প্রযুক্তি এবং তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের সচিবদের নিয়ে গঠন করা হল এই ‘প্ল্যাটফর্ম ’। শিশু ও মহিলা উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তরের সচিবকে করা হয়েছে এর এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর। সকলের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে এই ‘প্ল্যাটফর্মের’ দৈনন্দিন কাজের জন্য দপ্তরগুলিতে একজন করে পদস্থ আধিকারিককে নোডাল অফিসার হিসেবে রাখা হয়েছে।
আবার এই প্রকল্পের মাধ্যমে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে নারীদের চাকরির পরিবেশ আরও উন্নত করার উদ্যোগও নেওয়া হবে। চাকরি করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই মহিলাদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তার নিরাময়ের উপায়ও নিশ্চিত করা হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে কথা বলে।
রাজ্যের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চালু করা নিয়ে অনেকেই রাজ্যকে ব্যঙ্গ করেছিলেন। বলা হয়েছিল, প্রতি মাসে আর্থিক অনুদান না দিয়ে মহিলাদের জন্য স্থায়ী চাকরির সুযোগ তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল। তাই এবার মহিলাদের চাকরি নিশ্চিত করতে পৃথক প্রকল্প নিল রাজ্য সরকার।