How to Strat Pharmacy Business: বর্তমানের সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা হল ফার্মেসী ব্যবসা। যেখান থেকে আপনি খুব সহজেই অনেক বেশি ইনকাম করতে পারবেন। আর সেই কারণেই মূলত আজকের দিনে শহরের আনাচে-কানাচে ফার্মেসি ব্যবসা ক্রমে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আজকের এই প্রতিবেদনে জানিয়ে দেবো আপনি কিভাবে ফার্মেসি ব্যবসা শুরু করবেন এবং তার থেকে মোটা অংকের টাকা আয় করবেন।
ফার্মেসী ব্যবসা কি?
সহজ কথায় যে দোকানগুলোতে আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় ঔষধ গুলো কিনতে পাওয়া যায় সেই দোকানগুলোকে বলা হয় ফার্মেসি। আর যখন আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় ওষুধ গুলো নিয়ে ব্যবসা করবেন তখন তাকে বলা হয় ফার্মেসী ব্যবসা। বর্তমান সময়ে আপনি এমন অনেক ধরনের বিজনেস দেখতে পাবেন, কিন্তু এইসব ব্যবসার মধ্যে ফার্মেসি ব্যবসা হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যবসা যা থেকে খুব সহজেই অনেক বেশি টাকা আয় করা যায়।
ফার্মেসী ব্যবসায় লাভ কেমন হয়?
কোন একটি ব্যবসা থেকে আপনি কি পরিমাণ টাকা লাভ করতে পারবেন সেটা স্পষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু ব্যবসার লাভ কিছু কিছু কারণ এর উপর নির্ভর করে থাকে। যেমন-
১) ওষুধের কোম্পানির উপর নির্ভর করবে-
যেহেতু আপনি ফার্মেসি ব্যবসা শুরু করবেন তাই আপনার ব্যবসার মূল উপকরণ হলে ওষুধ। এখন ফার্মেসিতে কিন্তু শুধুমাত্র একটি কোম্পানির ওষুধ থাকবে না বরং আপনাকে বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন ওষুধ রাখতে হবে। সব কোম্পানির ওষুধ থেকে আপনি একই কমিশন পাবেন না। আপনি যদি Square কোম্পানির ওষুধ সেল করেন তাহলে আপনি কম কমিশন পাবেন আবার আপনি যদি ইউনানী বা হামদর্দ কোম্পানির ওষুধ সেল করেন তাহলে তুলনামূলকভাবে বেশি কমিশন পাবেন।
২) ওষুধ সেল এর উপর নির্ভর করবে-
আপনি যে ব্যবসাই শুরু করুন না কেন সেই ব্যবসাতে যদি পর্যাপ্ত কাস্টমার না থাকে তাহলে কিন্তু আপনার সেখান থেকে তেমন লাভ হবে না। কারন শুধু ফার্মেসির দোকান থাকলেই হবে না, বরং সেই দোকানের জন্য পর্যাপ্ত কাস্টমার থাকতে হবে। আপনি যদি ওষুধ বিক্রি করে কমিশন কম নেন তাহলে কাস্টমার এমনিই আপনার দোকানে আসবে। মোট কথা আপনি ১% কমিশন রাখলেও আপনার যদি পর্যাপ্ত কাস্টমার থাকে তাহলে এমনিই ওষুধ সেল হয়ে যাবে।
৩) আপনার নিজের দক্ষতার উপর নির্ভর করবে-
যেহুতু আপনি ফার্মেসি ব্যবসা করবেন তাই এই ব্যবসাটি পরিচালনা করার জন্য আপনাকে দক্ষ হতে হবে। ব্যবসায় আপনার কি পরিমান লাভ হবে তা আপনার কিছু কিছু কাজের উপর নির্ভর করবে। আপনি যদি এগুলো কে সঠিকভাবে মেইনটেইন করতে পারেন, তাহলে আপনি বেশি পরিমানে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। যেমন নতুন অবস্থায় আপনার দোকানে কাস্টমার কম থাকবে তখন আপনি একাই দোকান সামলাতে পারবেন। কিন্তু যত দিন যাবে তত কাস্টমারের চাপ বাড়বে, তাই তখন আপনাকে কর্মচারী রাখা জরুরি হবে। তারপর কাস্টমারের সাথে ভাল ব্যবহার আপনার দোকানে নতুন কাস্টমার আনতে সাহায্য করবে। তাই লাভও তখন বেশি হবে।
ফার্মেসি ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন?
ফার্মেসী ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনাকে কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে। সেগুলি হল-
- ড্রাগ লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে
- ওষুধ কেনার জন্য মোটা অংকের টাকা ইনভেস্ট করতে হবে
- দোকানের স্থান নির্বাচন করতে হবে
- আপনার নির্ধারিত দোকানগুলোতে থাকা ওষুধগুলোকে সাজিয়ে নিতে হবে
- ফার্মেসিতে ডক্টর রাখতে হবে
- সব ধরনের ওষুধ চিনে রাখতে হবে
ড্রাগ লাইসেন্স কি এবং কিভাবে সংগ্রহ করতে হবে?
কোন বিষয়ে লাইসেন্স করার মানে হলো সেই কাজের জন্য মহামান্য হাইকোর্ট থেকে আদেশ নেওয়া। সেটা হতে পারে কোন ব্যবসার ক্ষেত্রে কিংবা কোন যানবাহনের ক্ষেত্র। এখন আপনি যদি ওষুধ বিক্রি করার জন্য ফার্মেসি নিতে চান তাহলে আপনাকে ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রি করার জন্য হাইকোর্ট থেকে অনুমতি নিতে হবে এবং এই কাজের পর আপনাকে একটি লাইসেন্স প্রদান করা হবে যাকে বলা হয় ড্রাগ লাইসেন্স।
ড্রাগ লাইসেন্স করার জন্য কি কি প্রয়োজন হয়?
এই লাইসেন্স নিতে গেলে আপনার বেশ কিছু কাগজপত্র এবং বেশ কিছু জিনিসের প্রয়োজন হবে। যেমন-
- আপনার একটি ব্যাংক একাউন্টের প্রয়োজন হবে
- আপনি যে লাইসেন্সের জন্য ফি জমা দিবেন তার একটা ট্রেজারি চালানোর মূল কপি জমা দিতে হবে
- আপনি যদি দোকান ভাড়া নিয়ে থাকেন তাহলে সেই দোকান ভাড়ার একটি চুক্তিপত্রের মূল কপি কিংবা ফটোকপি জমা দেওয়ার প্রয়োজন হবে। তবে দোকান যদি আপনার নিজস্ব জমিতে হয় তাহলে আপনার নিজস্ব দলিলপত্র জমা দিতে হবে
- এরপর আপনার প্রয়োজন হবে ফার্মাসিস্ট্যান্ট সনদপত্র অর্থাৎ আগে থেকে ফার্মেসি এর ব্যবসা করে এমন একজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আপনাকে একটি সনদপত্র নিতে হবে
- এরপর আপনাকে একটা ড্রাগ লাইসেন্স এর ফটোকপি ম্যানেজ করতে হবে মানে ড্রাগ লাইসেন্স করা আছে এমন একজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তা আপনাকে ফটোগ্রাফি করে জমা করে দিতে হবে
- এরপর যে মালিকের নামে দোকান নিবেন সেই মালিকের আধার কার্ড বা ভোটার কার্ডের ফটোকপি জমা দিতে হবে
- এরপর আপনাকে একটি ৭ নম্বর ফরম ফিলাপ করতে হবে এবং সেটি জমা দিতে হবে
- আবেদন করার ৩ মাসের মধ্যে আপনি ড্রাগ লাইসেন্স পেয়ে যাবেন।
মোটা অংকের টাকা ইনভেস্ট করতে হবেঃ
যদি আপনি ফার্মেসী ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনার সর্বপ্রথম যে বিষয়টি প্রয়োজন হবে সেটা হল আপনাকে মোটা অংকের টাকা ইনভেস্ট করতে হবে। কেননা একটি ফার্মেসিতে কিন্তু অনেক প্রকারের ওষুধ রাখার প্রয়োজন হয়। এখন আপনি যদি ওই ওষুধগুলো কিনতে যান তাহলে কিন্তু আপনাকে শুরুর দিকে প্রচুর পরিমাণে টাকা ব্যয় করতে হবে। তাই এখানে ইনভেস্টের একটি ব্যাপার থেকেই যায়।
দোকানের স্থান নির্বাচন করতে হবেঃ
ফার্মেসি ব্যবসা করার জন্য অন্যান্য বিষয়গুলোর মতো আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সঠিক স্থান নির্বাচন করা। কারণ যেহেতু আপনি একটি ব্যবসা করবেন তাই আপনার নির্ধারিত স্থানে ব্যাপক পরিমাণে মানুষের আনাগোনা থাকতে হবে। তাই জনবহুল স্থানে ফার্মেসী করতে হবে সবসময়ই।
ফার্মেসিতে ডাক্তার রাখতে হবেঃ
আপনি যদি আপনার ফার্মেসিতে একটি ভালো ডাক্তার রাখতে পারেন তাহলে কিন্তু আপনি আলাদা কিছু সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। কারণ আপনি ফার্মেসিতে শুধু ওষুধ বিক্রি করবেন কিন্তু অনেক সময় মানুষ তাদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আপনার কাছে আসবে। তাই আপনি যদি সেখানে একজন ডাক্তার রাখেন তাহলে ডক্টর রোগীদের রোগ নির্ধারণ করবে এরপর যে যে ওষুধগুলোর প্রয়োজন হবে সেগুলো আপনার ফার্মেসি থেকেই বিক্রি হয়ে যাবে।